মোহাম্মদ বেলাল উদ্দিন: সড়কে বড় বড় গর্ত। সেই গর্তে জমে আছে ময়লা দুর্গন্ধযুক্ত কাদা আর পানি। ফলে সড়কটি দিয়ে চলাচল করতে গিয়ে দুর্ভোগ পোহাচ্ছে হাজার হাজার মানুষ।
বহু বছর ধরে এ অবস্থা বাঁশখালী উপজেলার ছনুয়া ইউনিয়নের মাওলানা আশরাফ আলী সড়কটির। এই সড়কে গাড়ি চলাচল দূরের কথা মানুষের হাঁটাচলা কঠিন হয়ে পড়েছে। তারপরও সড়কটি দিয়ে প্রতিদিন স্থানীয় বাসিন্দা, মাছ ব্যবসায়ী, ফিশিং বোটের কর্মচারীসহ প্রায় দশ হাজার মানুষ চলাচল করতে বাধ্য হন।
স্থানীয় বাসিন্দা ফারুকুল ইসলাম বলেন, ‘এই রাস্তা দিয়ে চলাফেরা করে এক নাম্বার পাড়া, মোহাজের কলোনী, খুদুকখালীর ১০ হাজার মানুষ। কয়েক বছর আগে রাস্তাটির কিছু অংশে জেলা পরিষদের অধীনে ইট বসানো হয়েছিল। কিন্তু পরে সংস্কার কাজ না হওয়ায় রাস্তার ইটগুলো খসে পড়েছে। কিছু অংশে ভাঙন দেখা দিয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘এখানকার মানুষের উপার্জনের প্রধান মাধ্যম কৃষি, সাগর থেকে মাছ আহরণ ও লবণ চাষ। কিন্তু পরিবহনের অভাবে এসব পণ্যের ভালো দাম মিলছে না। জরুরি অবস্থায় রোগী হাসপাতালে নেয়া সম্ভব হয় না বলে অনেককে বিনা চিকিৎসায় মৃত্যুবরণ করতে হয়েছে।’
আবদুল করিম নামের স্থানীয় একজন বাসিন্দা বলেন, ‘মোহাজের কলোনী গ্রামের ৫০টি পরিবারে ৭৫ জন কোরআনের হাফেজ রয়েছেন। এ কারণে এ গ্রাম ‘হাফেজদের গ্রাম’ নামে পরিচিত। এমন একটি গ্রাম যুগ যুগ ধরে অবহেলিত। উন্নয়নের ছোঁয়া লাগে না এই এলাকায়।’
এদিকে ১৯৯১ সালের ঘূর্ণিঝড়ে মোহাজের কলোনি গ্রামে অসংখ্য মানুষের প্রাণহানি ঘটে। তখন এলাকার যোগাযোগ ব্যবস্থার ব্যাপক ক্ষতি হয়। তখন থেকেই উপজেলা সদরের সাথে সংযোগ স্থাপনকারী এ সড়কটি সংস্কারবিহীন পড়ে আছে। প্রতি বছর বর্ষা আসলে বৃষ্টির পানি নামতে দেরি হওয়ায় রাস্তাটি পানির নিচে তলিয়ে যায়। ফলে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে।
গতকাল মঙ্গলবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, রাস্তাটিতে হাঁটু পরিমাণ কাঁদার সৃষ্টি হয়েছে। কিছু স্থানে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। কিছু স্থানে হাঁটু পরিমাণ পানিতে কাঁদা মাড়িয়ে চলাচল করছেন স্থানীয়রা।
স্থানীয়রা জানান, এই রাস্তা দিয়ে চলাফেরা করে মোহাজের পাড়া দারুল কোরআন আল-ইসলামিয়া মহিলা মাদ্রাসা, খুদুকখালী মোহাজের কলোনি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মোহাজের পাড়া তাফহিমুল কোরআন হাফেজিয়া মাদ্রাসা ও মোহাজের পাড়া ইবাদতখানার শিক্ষার্থীরা।
এ বিষয়ে জানার জন্য ছনুয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এম হারুনুর রশীদকে কল দেওয়া হলে তিনি রিসিভ করেননি।
জানতে চাইলে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের বাঁশখালী উপজেলা প্রকৌশলী আশরাফুল ইসলাম ভুঁইয়া বলেন, ‘মাওলানা আশরাফ আলী সড়কের প্রাক্কলন প্রস্তুত করে মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। আশা করছি, শিগগিরই অনুমোদন পাওয়া যাবে। অনুমোদন পেলে টেন্ডার প্রক্রিয়া শুরু করা হবে।’