মিজান বিন তাহের, বাঁশখালী টাইমস: ছনুয়া ইউনিয়নের প্রাচীনতম কাতেবী শাহ্ (রা:) জামে মসজিদের দীর্ঘকাল ধরে কোন সংস্কার নেই। মানস করে দুর-দুরান্ত থেকে মসজিদের জন্য ভক্তদের দেয়া বাৎসরিক লক্ষ লক্ষ টাকা আত্মসাতের অভিযোগসহ দান বক্স চুরির ঘটনা ঘটেছে। এনিয়ে মসজিদের মুসল্লীসহ স্থানীদের মাঝে ক্ষোভ বিরাজ করছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ঐতিহ্যবাহী এই মসজিদটির মেইন গেইটে রক্ষিত দান বক্সটি মঙ্গলবার ২.৩০ মিনিটের সময় তালা ভেঙ্গে টাকা পয়সা লুট করার সময় স্থানীয়রা কয়েকজনকে দেখে ফেলে। তাদেরকে লক্ষ্য করে ফাঁকা গুলি ছুঁড়লে পালিয়ে যায় চোরের দল। এসময় দান বক্স সংলগ্ন পাশ্ববর্তী বাড়ির ফরিদুল আলম জানান, সে তার বাড়ির আঙ্গিনায় মাছের প্রজেক্টে মাছ ধরতে স্থানীয় আরকানকে সাথে নিয়ে জাল বসায়। এক পযার্য়ে ১২ জনের একটি চোরের দল অস্ত্র, লোহার রড় ও কিরিচ নিয়ে দান বক্সটি ভাঙ্গতে গেলে দান বক্সের পাশে সৌর বিদ্যুতের স্ট্রিট লাইটের আলোতে আমরা তাদের দেখে ফেললে তারা আমাদেরকে অস্ত্রের ভয় দেখি পালিয়ে যায়। লুট করে পালিয়ে যাওয়ার সময় আমরা মিজান, আব্দুল করিম, আব্দুস শুক্কুর ও জিহাদ (কালু)কে চিনতে পেরেছি।
এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকায় তীব্র উত্তেজনা বিরাজ করছে। যে কোন মুহুর্তে ঘটতে পারে বড় ধরণের প্রাণহানিকর ঘটনা।
এ ব্যাপারে কাতেবী পরিবারের দাতা গোষ্টির সদস্য ও স্থানীয় মুসল্লী নুরুল ইসলাম,ছুফি আলম, আজিজুল্লাহ ও বদি আলম জানান, দীর্ঘ দিন যাবৎ এই ঐতিহ্যবাহী মসজিদটির কোন সংস্কার কাজ না করে ভুয়া মোতয়াল্লী দাবি করে লুটপাট করে কোটি কোটি টাকা খাচ্ছে। অথচ মসজিদের কোন সংস্কার কাজ করছেনা। এ নিয়ে এলাকাবাসীসহ আমরা সকলে গত ৮ নভেম্বর শুক্রবার জুমার নামাজ পড়ে একটা সীদ্ধান্ত গ্রহণ করি এবং সকলের সর্বসম্মতি ক্রমে দান বক্স গুলোতে তালা বদ্ধ করে দিই। কিন্তু কতিপয় মোতয়াল্লী দাবী করা কলিম উল্লাহর ইশারায় এই দানবক্স গুলো রাতের আঁধারে ভেঙ্গে টাকা পয়সা লুট করে। আমরা এই চোরদের কঠোর বিচার চাই।
লমসজিদের মতোয়াল্লী কলিম উল্লাহ জানান,
আমি কাতেবী বংশের আওলাদ এবং সরকারীভাবে নিযুক্ত মোত্তয়াল্লী, মসজিদের দান বক্স গুলো প্রায় সময় তালা ভেঙ্গে চুরি করে, স্থানীয় একটি চক্র আমাকে এবং মসজিদের ইমাম মুয়াজ্জিনকে না জানিয়ে অতর্কিত ভাবে দান বক্স গুলোতে তালা ঝুলিয়ে দেয়। আমি ইতিপূর্বে মসজিদটি ভেঙ্গে নতুন মসজিদ তৈরি করার জন্য ১০ লক্ষ টাকা বাজেট করেছি, তারই ধারাবাহিকতায় ইট এবং নিত্য প্রয়োজনীয় মালামাল ক্রয় করে মসজিদের পাশে রেখেছি। কিন্তু এই চক্রটি আমাকে মসজিদের জায়গা তাদের বলে নির্মাণ কাজ করতে বাঁধা দিচ্ছে এবং মসজিদ নির্মাণ করতে না পারি মত অাদালতে একটি মামলাও করেছে। তাবে দানবক্স গুলো যারাই চুরি করুক না কেন, আমি তাদের বিচার চাই এবং বিষয়টি মৌখিক ভাবে তাৎক্ষনিকভাবে স্থানীয় চেয়ারম্যান মেম্বারদেরকে ও জানিয়ে রেখেছি। আমি কোন সংঘাতে যেতে চাই না, আমি চাই এলাকাবাসীকে সাথে নিয়ে মসজিদটি নতুন ভাবে তৈরি করতে। ইনশাআল্লাহ শীঘ্রই মসজিদটি নতুন ভাবে নির্মাণ করা হবে। এতে এলাকাবাসীসহ প্রশাসনের সার্বিক সহযোগিতা চাই।
স্থানীয় ইউপি সদস্য মাওঃ আব্দুল ওয়াছেফ
জানান, চুরি হওয়ার ঘটনা শুনেছি, স্থানীয় মুসল্লীদের বিষয়টি চেয়ারম্যানকে অবিহিত করার পরামর্শ দিয়েছি। চুরি যেই করুক তাদের বিচার হওয়া উচিত।
এ ব্যাপারে ছনুয়া ইউনিয়ন পরিষদের
চেয়ারম্যান মোঃ হারুনুর রশিদ জানান, বিষয়টি আমি জানার পর গ্রাম পুলিশ পাঠিয়েছিলাম, বিষয়টি সত্য, আমি তাদেরকে স্থানীয় মুসল্লীদের নিয়ে চোর সনাক্ত করার জন্য বলে দিয়েছি,বযারা এই চুরি ঘটনাটি ঘটিয়েছে তাদের সনাক্ত করে বিচারের মুখামুখি করা হবে।