আরকানুল ইসলাম: জমে ক্ষীর চট্টগ্রাম বইমেলা! আজ অমর একুশে ফেব্রুয়ারি উপলক্ষে সকাল আটটা থেকেই লোকে লোকারণ্য ছিল বইমেলা। বাবা-মা’র সাথে তাদের ছোট-বড় সন্তানেরা সাথে এসেছিল। তারা বই কিনেছে, ঘুরে বেড়িয়েছে, খুব আনন্দ করেছে। একেকজন একেক সাজে সেজেছিল চোখে পড়ার মতো! কারো গালে অ, অা, ক, কারো গালে ছিল ২১ ফেব্রুয়ারি লেখা! কারো মাথায় বা ছিল ফুল!

দুপুর গড়ালেও পাঠক-লেখক-দর্শনার্থীর আনাগোনা কমেনি এতটুকু। মেলার মাঠে চলতে-ফিরতে দুষ্কর হয়ে পড়েছিল! তবুও যেন সবার মুখে আনন্দ আর আনন্দ!
কয়েকজনের সাথে কথা বলে জানা গেছে, মেলায় এত লোক সমাগমে তারা খুশি। ঢাকায় না-গিয়ে চট্টগ্রামেই যেন ঢাকা বইমেলার আমেজ!
কাপ্তাই থেকে স্ত্রী-কন্যাকে নিয়ে আসা লেখক-শিক্ষক মাঈনুল এইট সিরাজী জানান, চট্টগ্রামে এমন মেলা হওয়ায় তিনি খুব খুশি। তিনি বলেন, মেলার এই আমেজ ধরে রাখা আমাদের দায়িত্ব। তার সাথে সুর মিলিয়ে তার স্ত্রী জানান, মিডিয়া যেন এই মেলাকে আরো ফোকাস করে, তবেই এই মেলা স্থায়ী হবে।
সেবামূলক সংগঠন ব্রাদার বাহার, চট্টগ্রামের (বিবিসি) কর্ণধার আহমেদ রশীদ বাহাদুর বলেন, চট্টগ্রামে খুব সুন্দর বইমেলা হচ্ছে। সিটি করপোরেশন ও চট্টগ্রামের সৃজনশীল লেখক-প্রকাশকদের এই উদ্যোগ কিছুতেই ব্যর্থ হতে দেয়া যাবে না।
নগর ও নাগরিকের সভাপতি লায়ন এম. আইয়ুব বলেন, মেলার প্রয়োজনে এখানে কিছু ফুডকোড স্থাপন করা দরকার ছিল। আশা কর্তৃপক্ষ আগামীবার সেসবের দিকে সুদৃষ্টি রাখবেন।
বইমেলার গার্ডিয়ান, সমকালীন প্রকাশনীতে দিনভর ভিড় লেগেছিল, যা মেলার শেষদিকেও লক্ষ্য করা গোছে। এছাড়াও পেন্সিল, শব্দশিল্প, প্রথমা, বাতিঘর, অক্ষরবৃত্ত, সালফি, পুথিনিলয়, গ্রন্থ কুটির, পাঞ্জেরীর স্টলে লোকজনের ভিড় ছিল।
শালিক প্রকাশনের মালিক কবি আখতারুল ইসলাম জানান, আগে কোনো সময় এরকম বেচাবিক্রি হয়নি। যা এবার হচ্ছে। খুব আশাব্যঞ্জক।
গত কয়েক বছর থেকেই এমন বড় পরিসরে বইমেলা হওয়ার কথা থাকলেও হয়নি। তবে এবার প্রথমবারের মত চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের উদ্যোগে ঢাকার অাদলে বড় পরিসরে আয়োজিত হয় বইমেলা। শুরুর দিন থেকেই বেশ জমে উঠেছে এই বইমেলা। অন্যান্য দিনের তুলনায় গতকালের বইমেলায় ছিল উপচে পড়া ভিড়। চট্টগ্রাম এম এ আজিজ স্টেডিয়াম সংলগ্ন জিমনেশিয়াম মাঠের ভেতরে বাইরে ছিল লোকে লোকারণ্য।
উল্লেখ্য, গত ১০ ফেব্রুয়ারি ১৯ দিনব্যাপী অমর একুশে বইমেলা উদ্বোধন করেন তথ্যমন্ত্রী হাসান মাহমুদ এমপি। এবারের বইমেলায় মোট ১১০ টি প্রকাশনী অংশ নেয়। এর মধ্যে ৬০ টি ঢাকার আর ৫০ টি চট্টগ্রামের। প্রতিদিন বিকেল ৩ টা থেকে রাত ৯ টা ও ছুটির দিনে সকাল ৯টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত থাকে এই বইমেলা।