BanshkhaliTimes

গুলিতে দেড় হাজার উট হত্যা করল অস্ট্রেলিয়া

অতিরিক্ত পানি ও খাদ্য সাবাড় করার কারণে অস্ট্রেলিয়ার দক্ষিণাঞ্চলের ১০ হাজারেরও বেশি উটকে গুলি করে মেরে ফেলার সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করা শুরু হয়েছে। ওই হত্যাযজ্ঞের প্রথমদিনে বৃহস্পতিবার দেড় হাজার উটকে প্রশিক্ষিত স্নাইপার দিয়ে আকাশ থেকে (হেলিকপ্টার থেকে) গুলি করে মারা হয়েছে।

উট হত্যা করার কারণ হিসেবে বলা হয়েছে, অস্ট্রেলিয়ার ওই এলাকা প্রচণ্ড খরাপ্রবণ। সেখানে স্বাভাবিকভাবেই খাদ্য ও পানির সংকট থাকে। আর এবার পুরো অস্ট্রেলিয়াজুড়ে ব্যাপক দাবানলে পরিস্থিতি আরো ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। এমতাবস্থায় উটগুলো প্রচুর পরিমাণে পানি পান করায় সেই সংকট আরও মারাত্মক রূপ নিয়েছে।

এমন সময় আদিবাসীদেরকে বাঁচাতে উটগুলোকে মেরে ফেলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ওই এলাকায় ২,৩০০ জন আদিবাসীর বাস রয়েছে। এক আদিবাসী নেতার কাছ থেকে এ বিষয়ে আদেশ আসার পর উটগুলো মারার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দেশটির কর্তৃপক্ষ।

আদিবাসী এলাকার (এওয়াইপি) নির্বাহী বোর্ডের সদস্য মারিতা বেকার স্থানীয় সংবাদমাধ্যমকে জানান, আমরা যে অঞ্চলে থাকি সেখানে খুব গরম পড়ে। খুবই অস্বস্তিকর পরিবেশের মধ্যে আছি। এর মধ্যে উটগুলোর উৎপাত আমাদের বিষিয়ে তুলেছে। তারা পানির জন্য ঘরবাড়িতে হানা দিচ্ছে, বেড়া ভেঙে দিচ্ছে। ক্ষেত মাড়িয়ে এসে ফসলের ক্ষতি করছে।

দেশটির জাতীয় বন্য উট ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনা বিভাগের দাবি, এই উটদের সংখ্যা যদি নিয়ন্ত্রণ করা না যায়, তাহলে প্রতি নয় বছরে সংখ্যা দ্বিগুণ হয়ে যাবে। বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধির জন্যও উট দায়ী। কার্বনডাই অক্সাইড নিয়ন্ত্রণে কাজ করা কার্বন ফার্মিং স্পেশালিস্টস রিজেনকোর প্রধান নির্বাহী টিম মুরে বলেন, এক মিলিয়ন উট প্রতিবছর এক টনের সমপরিমাণ কার্বন নিঃসরণের জন্য দায়ী। অর্থাৎ, ৪ লাখ গাড়ি থেকে যে পরিমাণ কার্বন নিঃসরণ হয়, সেই পরিমাণ কার্বন ডাই অক্সাইড সৃষ্টির জন্য দায়ী উট।

অন্যদিকে, অস্ট্রেলিয়ায় দাবানলে এখন পর্যন্ত অর্ধশতাধিক মানুষ সহ ৫০ কোটি বন্যপ্রাণীর মৃত্যু হয়েছে।

উট অস্ট্রেলিয়ার স্থানীয় প্রাণী নয়। ১৮৫০ সালের দিকে অস্ট্রেলিয়ায় প্রথম উট নিয়ে গিয়েছিলো ইউরোপীয় অভিযাত্রীরা।

বর্তমানের অস্ট্রেলিয়ায় সবচেয়ে বেশি উট বিচরণ করছে। দেশটির আভ্যন্তরীন মরুভুমি অঞ্চলে অন্তত ১০ লাভ উট বিচরণ করছে।

Spread the love

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *