BanshkhaliTimes

কালীপুরে নিমকালী মায়ের পূজো সমাপন

BanshkhaliTimes

কালীপুর গ্রামে দীপাবলিতে মঙ্গলপ্রদীপ জ্বলেছে, কারণ কালীপুরেই নিমকালী মন্দির।
এমনিতে নিমকালী মায়ের পূজোর সময় এই গ্রামটা খুশিতে মাতোয়ারা থাকে। গ্রামের বাসিন্দারা ও ভক্তরা মনভরে নিমকালী মায়ের পুজো করেছে। আচার অনুষ্ঠান কিছুই বাদ যায় নেই। আগের লেখাতেই বলেছিলাম, পূজোর আগে অনেকে স্বপ্ন দেখেছেন আজানুলম্বিত চুলের শ্যামবর্ণা একটি বাচ্চা মেয়ে নূপুর পরা রাঙা পায়ে হরিতকি তলা থেকে রাস্তা দিয়ে ছুটে ঢুকে নিমকালী মন্দিরের দালানে মিলিয়ে যেতে। মেয়েটির নূপুরের ঝুমঝুম শব্দ গভীর ঘুমে অনেকেই শুনেছেন। বিভিন্ন সূত্রে দাবি, নিমকালী মায়ের পুজো প্রায় শতবছরের প্রাচীন।
পূজোর দিন সন্ধ্যায় মায়ের মন্দিরে গিয়ে দেখলাম, মায়ের পুজোর আগে থেকেই সমস্ত উপকরণ তৈরি করার কাজ শুরু হয়ে গেছে। মঙ্গলঘট, বরণডালা সাজানো হয়েছে।
১০৮ টা দুর্বা আর ১০৮ টা চাল তুলোর মধ্যে দিয়ে লাল সুতো দিয়ে সিঁদুরে মাখিয়ে অর্ঘ্য তৈরি হয়েছে। দেবীকে অর্পণ করার পর সেটি তুলে নেওয়া হয়। এই নিমকালী মন্দিরের অর্ঘ্যের বিসর্জন হয় না।
দূর দূরান্তরের বহু মানুষ এসেছেন এই মন্দির থেকে অর্ঘ্য নিতে। মায়ের আশীর্বাদী হিসাবে নিজেদের কাছে রাখেন তাঁরা প্রিয়জনের অসুস্থতা সারাতে বা মনস্কামনা পূর্ণ করতে।
শুনেছি পুজোর দিন সকাল থেকে মাকে সাজানো হয়েছে। সোনা রুপোর গয়না, রুপোর মুকুট , সোনার মুকু‌ট খাঁড়া-সহ বেশ কিছু অলংকার দিয়ে । মন্দিরের সবই অলংকার পরানো হয়েছে নিমকালী দেবীকে।

পুজোর সময় ১৬ থেকে ১৭ টি নৈবেদ্য চাল, কলা , মিষ্টি, নারকেলের মণ্ডা পানের খিলি দিয়ে সাজিয়ে দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়াও ছোট ধামায় দেওয়া হয় পাঁচকলাই আর ছোলা ভিজানো। নারকেলের মণ্ডা, ছাপা মিষ্টি, রসকড়াই, চন্দ্রপুলি , দই দেওয়া হয়েছে।হাজারো ভক্ত এসেছিল পুজো দিতে।
নিমকালী মন্দিরের পুজোর সময় যাঁদের মনস্কামনা ছিল তাঁরা দণ্ডী কাটতেও দেখা যায়। বুক চিরে রক্ত দিয়ছেন অনেক ভক্ত। এছাড়াও নারী পুরুষ নির্বিশেষে যাঁরা মানত করেছে পুজোর সময় তাঁরা ধুনো পোড়াইয়েছেন। মায়ের পূজোর পর শুরু হয় হোম।
পুজোতে পাঁঠাবলি হয়েছে। ভক্তরা বিশ্বাস করেন বলির সময় দেবী এগিয়ে আসেন। বলি হয়ে যাওয়া মাত্র বলির সামগ্রী রান্না করে ভক্তদের মাঝে বিতরণ করা হয়েছে।
মায়ের পূজোয় চন্ডিপাঠেরও আয়োজন করা হয়।
ঢাকের বাজনাও ছিল মায়ের পূজোতে।
আমার বিশ্বাস, এতসব আয়োজনে নিমকালী মা অবশ্যই খুশি হয়েছেন,ভক্তদেরকে আশীর্বাদও করেছেন।
সুচারুরূপে মায়ের পুজা সমাপনের জন্য মন্দির পরিচালনা পরিষদ সমাগত ভক্তদের প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন।

লেখক: তাপস কুমার নন্দী, সম্পাদক, নিমকালী মন্দির পরিচালনা পরিষদ।
জয় নিমকালী মা।

Spread the love

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *