
করোনা ভাইরাস : ইসলামি দৃষ্টিকোণ
প্রফেসর ড. আ. ম. কাজী মুহাম্মাদ হারুন উর রশীদ
করোনা ভাইরাস একটি নতুন প্রকৃতির ভাইরাস। যা চীনের উহানে ৩১ ডিসেম্বর ২০১৯ তারিখে প্রথম শনাক্ত হয়। এ উহান শহর থেকে পর্যাক্রমে বিশ্বব্যপী ছড়িয়েছে। বর্তমানে দুইশ’ দেশে প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাসটি ছড়িয়ে পড়েছে। চীন, কানাডা, ইতালি, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, জাপান, জার্মান, সুইজারল্যান্ড, সৌদি আরব, বাহরাইন, কাতার, কুয়েত, মিশর ও আরব আমিরাতসহ আরো বহু দেশে শিল্প প্রতিষ্ঠান বন্ধের পাশাপাশি অফিস-আদালত ও বিক্রয়কেন্দ্রগুলো বন্ধ ঘোষণা করেছে এবং কয়েকটি দেশ ছাড়া আক্রান্ত সব দেশে বিমান শিডিউলও বাতিল করেছে। আমাদের দেশে সর্বপ্রথম ৮ মার্চ এ করোনা ভাইরাসটি শনাক্ত হয় এবং এরপর থেকেই সংক্রমণ শুরু হয়। পৃথিবীর অন্যান্য দেশের মতো আমাদের দেশেও ১৭ মার্চ থেকে ২৫ এপ্রিল পর্যন্ত সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। ২৬ মার্চ থেকে ২৫ এপ্রিল পর্যন্ত সরকারি-বেসরকারি সকল প্রতিষ্ঠান এবং নিত্য প্রয়োজনীয় বিক্রয়কেন্দ্রগুলো ছাড়া সব বিক্রয়কেন্দ্র বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। সাথে সাথে গণজমায়েতও নিষিদ্ধ করা হয়েছে। আর গণপরিবহণ, নৌচলাচল ও ট্রেন চলাচলও বন্ধ রাখা হয়েছে।
প্রাণঘাতী এ করোনা ভাইরাসটি মোকাবেলা করার জন্য পুরো বিশ্বই হিমশিম খাচ্ছে এবং সারা বিশ্বের মধ্যে এটি হুমকি তৈরি করছে। এ মহামারি আল্লাহর পক্ষ থেকে এক প্রকার শাস্তি। মানুষ যখন অত্যাচার-অনাচার, ব্যভিচার, খুন-খারাবি, অশ্লীলতা ও বেহায়াপনা ইত্যাদি পাপ কাজে লিপ্ত হয় তখন আল্লাহ তায়ালা মানুষকে দুনিয়াতেই শাস্তি দেন। আল্লাহ তায়ালা আগেও মানুষ পাপাচারে লিপ্ত হওয়ার কারণে যুগে যুগে বিভিন্ন জাতিকে শাস্তি দিয়েছেন। আল্লাহপাক কুরআনুল কারিমে ইরশাদ করেছেন ‘অবশ্যই আমি তোমাদের আগে বহু প্রজন্মকে ধ্বংস করেছি, যখন তারা অন্যায় কাজে লিপ্ত ছিলো।’ (সুরা ইউনুস, আয়াত-১৩) হাদিসে এসেছে ‘হযরত আয়েশা সিদ্দিকা (রা.) বর্ণনা করেছেন, আমি রাসুল (সা.)কে প্লেগ রোগ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলে তিনি আমাকে বললেন- ‘ইন্নাহু আযাবুন’ অর্থাৎ, তা একটি আযাব। আল্লাহ যার প্রতি ইচ্ছে করেন তার প্রতি এটি প্রেরণ করেন। আর আল্লাহ তায়ালা তার মুমিন বান্দাদের জন্য রহমত হিসেবে প্রেরণ করেছেন। কোনো ব্যক্তি প্লেগে আক্রান্ত জায়গায় সাওয়াবের আশায় ধৈর্য ধরে অবস্থান করে এবং তার অন্তরে দৃঢ় বিশ্বাস থাকে যে, আল্লাহ তাকদিরে যা লিখেছেন তাই হবে। তাহলে সে একজন শহীদের সমান সওয়াব পাবে। (সহিহ আল-বুখারি, হাদিস নং-৩৪৭৪)
করোনা ভাইরাস নিয়ে আমরা আতঙ্কিত। কিন্তু আমরা আতঙ্কিত না হয়ে সাবধানতা অবলম্বন ও সর্তক থাকতে হবে। সতর্ক হওয়ার জন্য আল্লাহপাক কুরাআনুল কারিমের মধ্যে ইরশাদ করেছেন ‘হে মুমিনগণ! তোমরা তোমাদের সতর্কতা অবলম্বন করো।’ (সুরা নিসা, আয়াত-৭১) সুতরাং এ আয়াত থেকে বলতে পারি আমরা উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা-আতঙ্কে দিন না কেটে সকলে ভাইরাস থেকে সতর্ক থাকতে হবে এবং আল্লাহর উপর তাওয়াক্কুল করতে হবে। আল্লাহ তায়ালা কুরআনুল কারিমের মধ্যে ইরশাদ করেছেন ‘হে নবী! আপনি বলে দিন, আমাদেরকে শুধু তা-ই আক্রান্ত করবে যা আল্লাহ আমাদের জন্য লিখে রেখেছেন, তিনি আমাদের অভিভাবক। আর আল্লাহর উপরই যেন মুমিনরা তাওয়াক্কুল করে।’ (সুরা আত্-তাওবা, আয়াত-৫১) হাদিসে এসেছে হযরত আবু হুরায়রা (রা.) বর্ণনা করেছেন ‘আল্লাহ তায়ালা পৃথিবীর এমন কোনো রোগ পাঠাননি, যার আরোগ্যের ব্যবস্থা আল্লাহ তায়ালা করে দেননি।’ (সহিহ আল-বুখারি, হাদিস নং-৫৬৭৮)
আজকে চিকিৎসাবিজ্ঞানে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হলে রোগীদেরকে কোয়ারেন্টাইনে রাখার কথা বলা হচ্ছে। কিন্তু আমাদের প্রিয় নবী মুহাম্মদ (সা.) পনেরশ’ বছর আগে হাদিসের মধ্যে এ কোয়ারেন্টাইনের কথা বলেছেন। হাদিসে এসেছে, রাসুল (সা.) ইরশাদ করেছেন ‘তোমরা যখন কোনো অঞ্চলে মহামারি বিস্তারের কথা শুনবে; তখন সে এলাকায় প্রবেশ করবে না। আর তোমরা যেখানে অবস্থান করো সেখানে মহামারি বিস্তার ঘটলে সেখান থেকে বের হবে না।’ (সহিহ আল-বুখারি, হাদিস নং-৫৭২৮) আর আজকে চিকিৎসা বিশেষজ্ঞগণ যে আইসোলেশনের কথা বলছেন সেটিও রাসুল (সা.) পনেরশ’ বছর আগে হাদিসে বলেছেন। তিনি অসুস্থ উটকে সুস্থ উটের সাথে রাখতে নিষেধ করেছেন। মানুষ হচ্ছে ‘আশরাফুল মাখলুকাত’ সৃষ্টির সেরা, তাহলে সুস্থ মানুষ কীভাবে অসুস্থ মানুষের সাথে থাকবে? রাসুল (সা.) ইরশাদ করেছেন ‘লা ইউরিদান্না মুমরিদুন আলা মুসিহহিন’ অর্থাৎ, কেউ যেনো রোগাক্রান্ত উটকে সুস্থ উটের সাথে না রাখে। (সহিহ আল-বুখারি, হাদিস নং-৫৭৭১)
বর্তমানে বিশ্বের ইসলামি স্কলার, মুফতি ও সৌদি আরব, কুয়েত, কাতার, আরব আমিরাত, তুরস্ক, মিশর, ইরান, আলজেরিয়া, জর্ডান ও মরক্কোর ফতোয়া বোর্ডগুলো এ দেশগুলোতে ফতোয়া দিয়েছেনে মসজিদে আজান চালু রেখে জুমা ও পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ মসজিদে না গিয়ে ঘরে আদায় করা জায়েজ। তাই এ দেশগুলোতে মসজিদে শুধু আজান চালু রেখেছে। আর আযানে ‘হাইয়্যালাস্ সালাহ’ এর পরিবর্তে ‘সাল্লু ফি বুয়ুতিকুম’ তোমরা তোমাদের নিজ ঘরে নামাজ আদায় করো) বলা হচ্ছে। ইসলামি শরিয়তে বিশেষ অবস্থার প্রেক্ষিতে মসজিদে না গিয়ে ঘরে নামাজ আদায় করা বৈধ। হাদিসে এসেছে আবদুল্লাহ ইবনে উমর (রা.) বর্ণনা করেছেন, তিনি বলেন, প্রচন্ড শীতের রাতে ‘দাজনান’ নামক স্থানে আজান দিলেন। তারপর উমর (রা.) ঘোষণা করলেন ‘সাল্লু ফি রিহালিকুম’ অর্থাৎ, তোমরা তোমাদের নিজ আবাস্থলেই নামাজ আদায় করো। পরে তিনি আমাদের জানালেন, রাসুল (সা.) সফরের অবস্থায় বৃষ্টি অথবা তীব্র শীতের রাতে মুয়াজ্জিনকে আজান দিতে বললেন এবং সাথে সাথে এ কথা ঘোষণা করতে বললেন যে, তোমরা নিজ আবাস্থলেই নামাজ আদায় করো। (সহিহ আল-বুখারি, হাদিস নং-৬৩২) বুখারি শরিফের আরেকটি হাদিসে এসেছে, আবদুল্লাহ ইবনে হারেস (রা.) বর্ণনা করেছেন, তিনি বলেছেন, আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) এক প্রবল বর্ষণের দিনে মুয়াজ্জিনকে বললেন, যখন তুমি ‘আশহাদু আন্না মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ’ বলবে তখন ‘হাইয়্যালাস্ সালাহ’ না বলে বলবে ‘সাল্লু ফি বুয়ুতিকুম’। তোমরা তোমাদের নিজ ঘরে নামাজ আদায় করো।) তখন মানুষ সেটি অপছন্দ করলো। এ সময় তিনি বললেন, আমার চেয়ে উত্তম ব্যক্তি (রাসুলুল্লাহ সা.) তা করেছেন। জুমা নিঃসন্দেহে জরুরি। আমি তোমাদেরকে মাটি ও কাদার মধ্য দিয়ে যাতায়াত করার অসুবিধায় ফেলতে অপছন্দ করি। (সহিহ আল-বুখারি, হাদিস নং-৯০১)
উল্লিখিত দু’টি হাদিসে অতি বৃষ্টি ও শীতের কারণে মসজিদে না গিয়ে ঘরে নামাজ আদায় করতে বলা হয়েছে। এ হাদিস থেকে আমরা বলতে পারি, অতি বৃষ্টি ও অসুস্থতার ভয় থাকলে মসজিদের জামায়াতে উপস্থিত না হয়ে ঘরে নামাজ আদায় করার অনুমতি রয়েছে। প্রাণঘাতী এ করোনা ভাইরাস এখন মহামারি, যার কারণে মানুষের মৃত্যু হতে পারে। চিকিৎসকগণ বলেছেন, গণজমায়েত পরিহার করতে। তাই সরকার গণজমায়েত নিষেধ করেছেন। জুমা ও জামায়াত গণজমায়াতের অন্তর্ভুক্ত। যার কারণে মানুষের মধ্যে এই ভাইরাস বিস্তার করার আশঙ্কা রয়েছে। তাই জুমা ও পাঁচ ওয়াক্ত জামায়াত মসজিদে না গিয়ে নিজ ঘরে আদায় করার অনুমতি রয়েছে। আমাদের বাংলাদেশ সরকার প্রজ্ঞাপন জারি করেছেন, জুমা ও পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ জামায়াতে না গিয়ে ঘরে আদায়ের নির্দেশ দিয়েছেন। তাই বর্তমানে আমাদের সকলের সরকারি আদেশ মেনে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ ও জুমার জামায়াতে না গিয়ে ঘরে নামাজ আদায় করতে হবে। তবে মসজিদে আজান হবে এবং খোলা থাকবে। শুধুমাত্র ইমাম, মুয়াজ্জিন ও খাদিমগণ নামাজ আদায় করবেন। আমরা জুমার নামাজের পরিবর্তে ঘরে জোহরের নামাজ আদায় করবো। হাদিসে এসেছে, রাসুল (সা.) ইরশাদ করেছেন ‘যে ব্যক্তি মুয়াজ্জিনের আহবান সত্ত্বেও কোনোরূপ ওজর ছাড়া জামায়াতে সালাত আদায়ে বিরত থাকে, তার সালাত গ্রহণযোগ্য হবে না। এরপর সাহাবীগণ রাসুল (সা.)কে জিজ্ঞেস করলেন ওজর কী? তখন রাসুল (সা.) বললেন, ভয় বা অসুস্থতা।’ অর্থাৎ, ভয়ভীতি ও মসজিদে গেলে অসুস্থ হয়ে যাওয়ার কারণ থাকলে জামায়াতে উপস্থিত হতে না পারলে তার জন্য দূষণীয় নয়। (আবু দাউদ, হাদিস নং-৫৫১) বুখারি শরিফের হাদিসে এসেছে, আবু বুরদাহ (রা.) বর্ণনা করেছেন, আমি আবু মুসা আশআরী (রা.)কে একাধিকবার বলতে শুনেছি, তিনি বলেন, রাসুল (সা.) বলেছেন ‘যখন বান্দা পীড়িত হয় কিংবা সফরে থাকে, তখন তার জন্যে তা-ই লেখা হয়, যা সে মুকিম বা সুস্থ অবস্থায় আমল করতো। (সহিহ আল-বুখারি, হাদিস নং-২৯৯৬) এ হাদিসগুলো থেকে আমরা বলতে পারি, মসজিদে না গিয়ে ঘরে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ ও জুমা আদায় করা যুক্তিযুক্ত।
এ করোনা ভাইরাস থেকে পরিত্রাণের জন্য আমাদের কিছু করণীয় রয়েছে। ১. আমরা হাঁচি-কাশির সময় টিস্যু, রুমাল বা কনুই ব্যবহার করবো। বর্তমানে আমাদের চিকিৎসা বিজ্ঞানে করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব থেকে আত্মরক্ষার জন্য হাঁচি-কাশির সময় টিস্যু, রুমাল বা হাত ব্যবহার করতে বলছেন। কিন্তু তা রাসুল (সা.) পনেরশ’ বছর আগে হাদিসে বলেছেন। রাসুল (সা.) বলেছেন ‘আবু হুরায়রা (রা.) বর্ণনা করেছেন, রাসুল (সা.) যখন হাঁচি দিতেন তখন মুখে হাত বা কাপড় দিতেন।’ (আবু দাউদ, হাদিস নং-৫০২৯) ২. আমরা এ কঠিন বিপদের সময় বেশি বেশি করে আল্লাহর ইবাদত করবো। আল্লাহপাক কুরআনুল কারিমে ইরশাদ করেছেন ‘তোমরা আল্লাহর ইবাদত করো, তিনি ছাড়া তোমাদের জন্য কোনো ইলাহ নেই।’ (সুরা হুদ. আয়াত-৫০) ৩. আমরা স্বাস্থ্যবিধি মেনে হাত ধৌত করবো। সেটিও রাসুল (সা.) হাদিসের মাধ্যমে আমাদেরকে শিক্ষা দিয়েছেন। রাসুল (সা.) ইরশাদ করেছেন ‘তোমাদের মধ্যে কেউ যখন ঘুম থেকে ওঠে, তখন সে যেন তার হাত তিনবার ধৌত করা ছাড়া পাত্রে প্রবেশ না করে।’ (সহিহ আল-বুখারি, হাদিস নং-১৬২) আর আমরা পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন থাকবো। পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতা ঈমানের অংশ। ৪. আমরা বেশি বেশি করে আল্লাহকে ডাকবো। আল্লাহ তায়ালা কুরআনুল কারিমে ইরশাদ করেছেন ‘যখন মানুষকে বিপদ স্পর্শ করে, তখন শুয়ে, বসে বা দাঁড়িয়ে আমাকে ডাকে।’ (সুরা ইউনুস, আয়াত-১২) ৫. আর সকাল বিকাল গুনাহ ক্ষমা চাইবো এবং তাওবা করবো। কুরআনুল কারিমে আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেছেন ‘তোমরা তোমাদের রবের কাছে ইস্তিগফার করো এবং তাঁরই কাছে তাওবা করো। নিশ্চয় আমার রব পরম দয়ালু ও অতীব ভালোবাসা পোষণকারী।’ (সুরা হুদ, আয়াত-৯০) ৬. কোন মানুষ নিজ এলাকায় এ ভাইরাসে আক্রান্ত হলে অন্যত্র চলে যাওয়া যাবে না। ধৈর্যধারণ, চিকিৎসা ও আল্লাহর উপর ভরসা করে নিজ এলাকায় থাকতে হবে। ৭. আমরা বেশি বেশি করে কুরআন তিলওয়াত করবো। হাদিসের মধ্যে এসেছে রাসুল (সা.) ইরশাদ করেছেন ‘তোমরা কুরআন পাঠ করো। কেননা, তা কেয়ামতের দিন সুপারিশকারী হিসেবে আসবে।’ (মুসলিম, হাদিস নং-৮০৪) রাসুল (সা.) আরো বলেছেন ‘যে ব্যক্তি আল্লাহর কিতাব থেকে এক হরফ পড়বে, তার জন্যে একটি পুণ্য। আর একটি পুণ্য দশটির সমান।’ (তিরমিজি, হাদিস নং-২৯১০) ৮. আর আমরা এ দোয়াটি বেশি বেশি করে পড়বো ‘আল্লাহুম্মা ইন্নি আউযুবিকা মিনাল বারাসি ওয়াল জুনুনি ওয়াল জুযামি ওয়া মিন সাইয়্যিল আসকাম।’ অর্থাৎ, হে আল্লাহ! অবশ্যই আমি আপনার কাছে শ্বেতী, উন্মাদ, কুষ্ঠরোগ এবং সকল প্রকার কঠিন রোগ থেকে আশ্রয় প্রার্থনা করছি। (আবু দাউদ, হাদিস নং-১৫৫৪) ৯. আর যাঁরা আক্রান্ত হয়েছেন তাঁরা সবসময় পড়ুন ‘আল্লাহুম্মা রাব্বান নাসি মুজহিবাল বাসি ইশফি আনতাশ শাফি লা শাফিয়া ইল্লা আনতা শিফায়ান লা ইউগাদিরু সাকামান’ অর্থাৎ, হে আল্লাহ! আপনি মানুষের রব। আপনি রোগ নিরাময়কারী। রোগ মুক্ত করে দিন। আপনি রোগ মুক্তিদাতা। আপনার রোগ মুক্তিই প্রকৃত মুক্তি। এ রকম পরিপূর্ণ শিফা দান করুন, যেন রোগের কোন প্রভাব না থাকে। (সহিহ আল-বুখারি, হাদিস নং-৫৭৪২)
আসুন, আমরা এ করোনা ভাইরাসে সতর্কতা অবলম্বন করি, গুজব না ছড়াই এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলি। আর পাশাপাশি আল্লাহর উপর ভরসা করি। আল্লাহ তাআলা আমাদের সবাইকে এ মহামারি থেকে হেফাজতে রাখুন। আমিন ॥
লেখক: কলামিস্ট ও গবেষক, প্রফেসর, আরবি বিভাগ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়।