ঈদে “ডাইরেক্ট বাঁশখালী, ভাড়া ১০০” কমাতে হবে
আরকানুল ইসলাম
পাশের অন্য উপজেলার চেয়ে বাঁশখালীর গাড়ি লক্করঝক্করমার্কা ও গাড়িভাড়া বেশি। দীর্ঘদিন ধরে এসবের বিরুদ্ধে ভুক্তভোগী যাত্রীরা বলে এলেও কাজের কাজ কিছুই হয়নি। বৃহস্পতিবার এলেই ড্রাইভার ও হেলপারদের ‘চাঁনরাইত’ শুরু হয়ে যায়।
“ডাইরেক্ট বাঁশখালী, ভাড়া ১০০” ব’লে চিল্লাইতে চিল্লাইতে গলা বানিয়ে ফেলে ফাটা বাঁশের মতো! নিয়মিত ভাড়া যেখানে ৭০ টাকা সেখানে তারা নেয় ১০০ টাকা করে। নতুন ব্রীজ থেকে চাঁনপুর গেলেও ভাড়া ১০০, প্রেমবাজার গেলেও ভাড়া ১০০! অবশ্য প্রেমবাজার পর্যন্ত ১০০ টাকা দিয়ে যাওয়া সম্ভবপর হয়ে ওঠে না, কারণ তারা জলদী পর্যন্তই যায়। জলদী থেকে চাম্বল, নাপোড়া ও প্রেমবাজারগামী যাত্রীকে নতুন করে গাড়ি ধরতে হয়!
এই জ্বালা প্রতি বৃহস্পতিবারের জ্বালা। কারো কিছু করার থাকে না। নতুনব্রীজে গাড়িসংকট দেখিয়ে ড্রাইভার ও হেলপাররা ফায়দা লুটতে থাকে।
সম্প্রতি তৈলারদ্বীপ ব্রীজে টোল আদায় বন্ধ হয়েছে সাবেক মেয়র মাহমুদুল ইসলাম চৌধুরীর তৎপরতায়। সাধুবাদ মেয়রকে। টোলবন্ধের পর এবার দাবি উঠেছে ভাড়ানৈরাজ্য বন্ধের।
বর্তমানে দাবি আদায়ের সবচে’ বড় ক্ষেত্র যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক। ক’দিন ধরেই ফেসবুকে ভাড়ানৈরাজ্য বন্ধের ব্যাপারে দাবি উঠিয়েছে বাঁশখালীয়ান ফেসবুকাররা। শতাধিক আইডিধারী এই দাবি তুলেছে। তাহলে কেন বন্ধ হবে না এই ভাড়াসন্ত্রাস, যানবাহনসসন্ত্রাস!
কারা নেবেন এই উদ্যোগ?
উদ্যোগ তো অলরেডি উঠেই গেছে, এখন পদক্ষেপ নেবার পালা। পদক্ষেপ নিতে হলে বাঁশখালীর নেতৃবৃন্দকে এক টেবিলে বসতে হবে। রাজনৈতিক মতভিন্নতার কারণে বিভিন্ন সময়ে নিজেদের মধ্য বক্তব্যবিরোধীতা হয়েছে এবং হবে, সেটা রাজনীতির ব্যাপার। কিন্তু ‘বাঁশখালী’র ব্যাপারে সবাইকে বসতেই হবে, যেমনটি তারা বিয়েবাড়িতে একসাথে বসেন বা মার্কিন দূতাবাস থেকে ডাকলে যেমনটি দৌড়ে গিয়ে দলভেদ না করে বসে পড়েন।
বিষয়টা কোনো প্রতীকের নয়, এটা নিজের জন্মস্থান বাঁশখালীর। তাইই, মাঝখান দিয়ে টাকা খেয়ে কেউ সরে যাবেন না।
এই উদ্যোগে অবশ্যই থাকা লাগবে-
বর্তমান সংসদসদস্য মোস্তাফিজুর রহমান, সাবেক প্রতিমন্ত্রী জাফরুল ইসলাম চৌধুরী, সাবেক মেয়র মাহমুদুল ইসলাম চৌধুরী ও বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান জহিরুল ইসলামকে।
সাথে আরো থাকতে পারেন রাজনীতিক আবদুল্লাহ কবির লিটন, শিল্পপতি ও সম্পাদক মুজিবুর রহমান সিআইপি, এডভোকেট জিয়া উদ্দীন চৌধুরী।
এবং অবশ্যই বাঁশখালী যানবাহন মালিক সমিতিকে সাথে নিয়ে বসতে হবে (বাস ও সিএনজি)।
ক’দিন পরেই ঈদুল আযহা। বাড়ি ফিরবে হাজারো মানুষ। তাদের যেন কোনোরকম বাড়তি ভাড়া দিতে না হয় সেজন্য দ্রুত এই কাজটা করতে হবে। ঈদে বাড়ি ফিরতে গিয়ে নতুন ব্রীজে যেন শুনতে না হয় “ডাইরেক্ট বাঁশখালী, ভাড়া ১০০”!
কিংবা সিএনজিঅলার মুখে যেন চাবি ঘুরাতে ঘুরাতে শুনতে না হয় “বাঁশখালী রিজার্ভ ১৫০০ টাকা”!