মিজান বিন তাহের, বাঁশখালী: বাঁশখালী উপজেলার পুকুরিয়ার ১নং ওয়ার্ডের চর-জুইদন্ডী এলাকায় আদালতের নিষেধাজ্ঞা থাকা জায়গা দখল করে মৎস প্রজেক্টের জন্য স্ক্যাবেটার দিয়ে মাটি কাটার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
মঙ্গলবার (২৯ মার্চ) বিকেলে স্থানীয় এলাকাবাসীদের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে সরেজমিনে পরিদর্শনকালে দেখা যায়, চট্টগ্রাম শহরের পতেঙ্গা এলাকার সৈয়দ নুর নামক একব্যক্তি পুকুরিয়া ইউপির ১নং ওয়ার্ডের স্থানীয় একটি সিন্ডিকেটর সাথে আঁতাত করে শঙ্খ নদীর তীরবর্তী চর-জুইদন্ডী এলাকায় জোরপূর্বক সরকারি ভূমি দখল করে স্ক্যাবেটার গাড়ি দিয়ে মাটি কেটে মৎস প্রজেক্ট করার কাজ চালিয়ে যাচ্ছে।
তারা আরও জানান, বিগত ২০২০ সালে উক্ত জায়গায় শাহাদত ব্রিক ফিল্ড নামক ইটভাটা নির্মাণের উদ্দেশ্যে কাজ শুরু করলে পরিবেশ দূষণ ঠেকাতে স্থানীয়দের অভিযোগের ভিত্তিতে ওই ইটভাটার নির্মাণ কাজ বন্ধ করার জন্যে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি), পরিবেশ অধিদপ্তর ও স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান উক্ত অবৈধ ইটভাটা নির্মাণের অপরাধে পঞ্চাশ হাজার টাকা জরিমানাসহ ইটভাটা নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দেন। বছর দুয়েক বন্ধ থাকলেও গত কয়েকদিন যাবৎ উক্ত জায়গায় পুনরায় স্ক্যাবেটর দিয়ে মাটি কেটে অন্যত্র সরিয়ে মৎস্য প্রজেক্ট তৈরি করার অভিযোগ ওঠে। মঙ্গলবার বিকেলে সরেজমিনে ঘটনাস্থল পরিদর্শন কালে সংবাদকর্মীদের উপস্থিতি টের পেয়ে স্ক্যাবেটর গাড়িটি রেখে কর্মরত শ্রমিকরা পালিয়ে যায়।
এ ব্যাপারে পুকুরিয়া ইউপি চেয়ারম্যান আলহাজ আসহাব উদ্দিন বলেন, চর-জুইদন্ডী এলাকাটি একসময় শঙ্খ নদীর পানির স্রোতে বিলীন হয়ে গিয়েছিল, এরই মধ্যে বিগত কয়েক বছর পূর্বে বালি ভরাট হয়ে চর এলাকায় পরিণত হয়, ওই চর এলাকায় স্থানীয় বেশ কিছু কৃষক পরিবার চাষাবাদ করে জীবিকা নির্বাহ করে থাকেন। কিন্তু গত ২০২০ সালে স্থানীয় একটি ভূমিদস্যু সিন্ডিকেটের সাথে আঁতাত করে চট্টগ্রামের পতেঙ্গা এলাকার সৈয়দ নুর নামক এক ব্যক্তি উক্ত সরকারি খাস জমি জবরদখল করে ইটভাটা নির্মাণ কাজ শুরু করলে বাঁশখালী উপজেলা প্রশাসন ও পরিবেশ অধিদপ্তরের যৌথ উদ্যােগে পরিবেশ ধ্বংসকারী নির্মাণাধীন অবৈধ ইটভাটা তৈরি করার অপরাধে জরিমানা আদায় ও নির্মাণকাজ বন্ধ করে দেন। প্রশাসন জরিমানা করার পরেও পুনরায় ইটভাটা নির্মাণ কাজ করায় পরিবেশ অধিদপ্তর অভিযুক্ত ভূমিদস্যু সৈয়দ নুরকে আরো বিশ লাখ টাকা জরিমানা করলে আর কাজ করবে না মর্মে পরিবেশ অধিদপ্তরকে মুচলেকা দেয়ার ফলে পরিবেশ অধিদপ্তর তিন লাখ টাকা জরিমানা আদায় করে। বছর দুয়েক না যেতেই আবারও প্রভাব খাটিয়ে বিজ্ঞ-আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে অভিযুক্ত ভূমিদস্যু সৈয়দ নুর স্ক্যাবেটর দিয়ে জোরপূর্বক ওই জায়গার মাটি নিয়ে যাচ্ছে, তার কাছে ওই জায়গার বৈধ কোনো কাগজপত্র না থাকা সত্ত্বেও জোরপূর্বক সরকারি খাস জায়গাসহ দখল করে নিচ্ছে বলেও জানান তিনি ।
এ ব্যাপারে রামদাস মুন্সির হাট ফাঁড়ি পুলিশ এস আই মোস্তফা কামাল বলেন, উক্ত জায়গায়
বিজ্ঞ আদালতের নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। উক্ত জায়গায় পুনরায় স্কেবেটর দিয়ে মাটি কাটার বিষয়টি আমরা জানতে পেরেছি। কিন্তু আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে মাটি কাটছে অভিযুক্তরা। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে মাটি কাটার কাজ বন্ধ রাখার জন্য বলেছি। আদালতের নিষেধাজ্ঞা নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত কেউ কাজ করলে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এই দিকে এ ব্যাপারে বাঁশখালী উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ওমর ফারুকের সাথে যোগাযোগ করার জন্য মুঠোফোনে একাধিক বার চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।