বাঁশখালী টাইমস: আজ শুভ জন্মাষ্টমী। সনাতন তথা হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের কাছে অত্যন্ত তাৎপর্যময় একটি দিন। হিন্দু শাস্ত্রমতে ভাদ্র মাসের কৃষ্ণপক্ষের অষ্টমী তিথিতে ভগবান শ্রীকৃষ্ণের মানব রূপে মর্তে আবির্ভাব ঘটে। আজ থেকে প্রায় ৫ হাজার বছর আগে দ্বাপর যুগে এ দিনে এক বৈরী সমাজে দুষ্টের দমন ও শিষ্টের পালনের উদ্দেশ্যে নিরাকার ব্রহ্ম বাসুদেব ও দেবকীর সন্তান হিসেবে পৃথিবীতে ভূমিষ্ঠ হয়েছিলেন। শৈশব থেকেই মনুষ্যশিশু শ্রীকৃষ্ণ এরকম একের পর এক অতিমানবিক ঘটনা ঘটাতে থাকেন, যা লীলা হিসেবে আখ্যাত। লীলাবলে ও লীলাচ্ছলেই শ্রীকৃষ্ণ ধ্বংস করেন কংসসহ অত্যাচারী রাজাদের। মর্তে শ্রীকৃষ্ণের ১২৫ বছরব্যাপী মনুষ্যরূপী লীলাসমূহকে সময়ানুসারে বৃন্দাবনলীলা (১ থেকে ১১ বছর), মথুরালীলা (১১ থেকে ২৩ বছর), দ্বারকালীলা (২৩ থেকে ১২৫ বছর) এ ভাগে ভাগ করেছেন শাস্ত্রকাররা।
বৈষ্ণব দর্শন বলে, রাধিকাসহ ব্রজগোপীদের সঙ্গে শ্রীকৃষ্ণের সম্পর্কের মধ্য দিয়ে পরমাত্মা আর জীবাত্মার মধ্যকার সম্পর্ক প্রতিভাত। প্রেমরূপের বিপরীতে গীতায় আমরা পাই কর্মযোগের উপদেশক শ্রীকৃষ্ণ। যার মুখে নিষ্কাম কর্ম ও ব্রহ্মজ্ঞানে জীবসেবার বাণী। মহাভারতের আখ্যানে শ্রীকৃষ্ণ যুদ্ধের সারথী, রাজনীতির মন্ত্রক। শ্রীকৃষ্ণ একাধারে দার্শনিক, রাজনীতিবিদ, যোদ্ধা, অনাথের নাথ ও অগতির গতি। নররূপী নারায়ণ ও মঙ্গলময় ঈশ্বর। সমস্ত গুণের আধার। প্রতিটি লীলাই তার ভিন্ন ভিন্ন গুণের প্রকাশ। ভিন্ন ভিন্ন কর্মের ও লক্ষ্যের বাস্তবায়ন। লীলাচ্ছলেই শ্রীকৃষ্ণ সৎ ধর্মের, সৎ কর্মের, সদাচারের, সর্বোপরি প্রেমের বাণী প্রকাশ করেছেন। যা লোকশিক্ষা হিসেবে সর্বস্থানে সর্বকালেই প্রাসঙ্গিক। শ্রীকৃষ্ণের জন্মের এ দিনটি- শ্রীকৃষ্ণের জন্মাষ্টমী উদযাপন এবং এর মধ্য দিয়ে শ্রীকৃষ্ণের কর্মের তাৎপর্য অনুধাবন তাই তাৎপর্যপূর্ণ।