আজ শহিদ বুদ্ধিজীবী দিবস

আজ শহিদ বুদ্ধিজীবী দিবস

আজ শহিদ বুদ্ধিজীবী দিবস। একটি ফুলকে বাঁচানোর অঙ্গীকার নিয়ে একাত্তরে দেশের মাঠে প্রান্তরে ছড়িয়ে পড়েছিল বাংলার দামাল ছেলেরা। জীবন বাজি রেখে তারা দিন-রাত ভুলে যুদ্ধ করেছিল শত্রুসেনার বিরুদ্ধে। সে-সময় বাংলার এই দামাল ছেলেদের নিজ জায়গা থেকে সহযোগিতা চালিয়েছিল বাংলার বিভিন্ন পেশাজীবীর গর্বিত সন্তানেরা। বিজয়ের স্বপ্নকে বাস্তবায়নের পেছনে এই পেশাজীবীরা তাদের জ্ঞান, বুদ্ধি আর মানসিকতা দিয়ে বাংলাদেশকে বিজয়ের তীরে বয়ে এনেছিল। কিন্তু দেশের এই অর্জনকে তখন মেনে নিতে পারেনি তাদের দেশীয় দোসর রাজাকার, আল বদর, আল শামস। তাই তো দেশ-রূপকার এই বুদ্ধিজীবীদের ঘর থেকে নিয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে তাদেরকে চোখ, হাত বেঁধে হত্যা করা হয়। সেই ইতিহাসের পাতা থেকে আজ শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস।

বাংলার বিজয় সুনিশ্চিত জেনেও ১৯৭১ সালের এই দিনে মহান মুক্তিযুদ্ধের চূড়ান্ত বিজয়ের প্রাক্কালে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ও তাদের এ দেশীয় দোসর রাজাকার, আল বদর, আল শামস বাহিনী জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান বরেণ্য হাজার হাজার লেখক, বিজ্ঞানী, চিত্রশিল্পি, কণ্ঠশিল্পি, সকল পর্যায়ের শিক্ষক, গবেষক, সাংবাদিক, রাজনীতিক, আইনজীবী, চিকিৎসক, প্রকৌশলী, স্থপতি, ভাস্কর, সরকারি ও বেসরকারি কর্মচারী, চলচ্চিত্র ও নাটকের সাথে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি, সমাজসেবী ও সংস্কৃতিসেবীদের চোখ বেঁধে বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে তাদের ওপর চালায় নির্মম-নিষ্ঠুর নির্যাতন চালায়। তারপর দেশজুড়ে শুরু নারকীয় হত্যাযজ্ঞ।

স্বাধীনতাবিরোধী চক্র বুঝতে পেরেছিল, তাদের পরাজয় অনিবার্য। ওরা আরো মনে করেছিল যে, বাঙালি জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানরা বেঁচে থাকলে এ মাটিতে ওরা বসবাস করতে পারবে না। তাই পরিকল্পিতভাবে জাতিকে মেধাহীন ও পঙ্গু করতে দেশের এসব বরেণ্য ব্যক্তিদের বাসা এবং কর্মস্থল থেকে রাতের অন্ধকারে পৈশাচিক কায়দায় চোখ বেঁধে ধরে নিয়ে হত্যা করে।

১৯৭১ সালের ১৪ ডিসেম্বরের হত্যাকাণ্ড ছিল পৃথিবীর ইতিহাসে জঘন্যতম বর্বর ঘটনা, যা বিশ্বব্যাপী শান্তিকামী মানুষকে স্তম্ভিত করেছিল। পাকিস্তানি বাহিনী ও তাদের এ দেশীয় দোসররা পৈশাচিক হত্যাযজ্ঞের পর ঢাকার মিরপুর, রায়েরবাজারসহ বিভিন্ন স্থানে বুদ্ধিজীবীদের লাশ ফেলে রেখে যায়। ১৬ ডিসেম্বর মুক্তিযুদ্ধে বিজয় অর্জনের পরপরই নিকটাত্মীয়রা মিরপুর ও রাজারবাগ বধ্যভূমিতে স্বজনের লাশ খুঁজে পায়।

আরও পড়ুন :

আজ মহান বিজয় দিবস: এগিয়ে যাওয়ার প্রত্যয়

Spread the love

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *