ক্রীড়া ডেস্ক : প্রায়ই আড্ডায় কিংবা অফিসিয়াল সংবাদ সম্মেলনে মাশরাফি বলে থাকেন, ‘ট্রফি জিততে ভাগ্যটাও লাগে। চ্যাম্পিয়নস লাক বড় মেটার করে’।
মাশরাফি বিন মুর্তজার সেই বিনে বাজছে বেদনার সুর। আরেকটি ফাইনাল হারল বাংলাদেশ। আরেকবার হৃদয় জিতল বাংলাদেশ। কিন্তু এবার সব পাওয়া পূর্ণ হয়েছে। ছোঁয়া হয়নি শুধু সোনালি ট্রফিটি। এশিয়ার কাপের মঞ্চে তৃতীয়বারের মতো রানার্সআপ বাংলাদেশ। অভিনন্দন বাংলাদেশ।
দুই-দুইবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ভারত। ছয়বারের এশিয়ার চ্যাম্পিয়ন তারা। যে দলে রোহিত শর্মা, শিখর ধাওয়ান, মহেন্দ্র সিং ধোনির মতো তারকা থাকেন, তাদের দলটা ফাইনাল জিতবে তা অনুমান করাই যায়। তারাই হট ফেবারিট। কিন্তু দুবাইয়ে ফাইনালের মঞ্চে বাংলাদেশ ভারতকে যে যেভাবে চেপে ধরল, তাতে তো নৈতিক জয় হয়েছে বাংলাদেশেরই।
শিখর ধাওয়ান আগের দিনই বলেছিলেন, বাংলাদেশ কত বছর হলো ক্রিকেট খেলছে? খুবই অল্প। এ সময়ে বেশ কয়েকবার ফাইনাল খেলেছে। আশা করি তারা খুব শিগগিরই ফাইনাল জুজু কাটাতে পারবে।’ একদিন পর হয়ত মাশরাফির দল সেই জুজু কাটাতে পারেনি কিন্তু পুরো পথটায় ভারতকে চোখ রাঙানি দিয়েছে।
লিটনের ১২১ রানের ইনিংসে ভারতের বিপক্ষে সংগ্রহ মাত্র ২২২। এ পুঁজি নিয়ে শেষ বল পর্যন্ত লড়াই চালিয়ে যান মাশরাফি ব্রিগেড। মাশরাফিদের মাঠে ছাড় না দেওয়ার প্রবণতা ছিল দুর্দান্ত। তাইত এ হারকে গৌরবের হার বলাই যায়। অভিনন্দন জানানো যায় পুরো দলকে।
চকচকে ট্রফিটা রোহিত শর্মার হাতে উঠতে দেখে হয়তে হৃদয়ে রক্তক্ষরণ হচ্ছিল মাশরাফি বিন মুর্তজার। আহ আর কয়েকটি রান করলে কিংবা বাঁচালে এ ট্রফিটা ছোঁয়া যেত। কিন্তু হয়নি। তাতে হয়ত সাফল্যভান্ডার ভরেনি, কিন্তু মানুষের হৃদয়ে তো জয় করে নিয়েছেন। ক্রিকেটীয় রোমাঞ্চের শেষ নাটকের এমন হার অনেক গৌরবের, অনেক আনন্দের।
দলের সেরা দুই তারকা নেই। তামিম ও সাকিব চোটের কারণে বাইরে। মুশফিক শতভাগ ফিট নন, মাহমুদউল্লাহরও একই দশা। মাশরাফি তো সার্ভাইভব করছেন দীর্ঘদিন ধরেই। ইনজুরি জর্জরিত দলটিকে নিয়ে মাশরাফি যে লড়াই করেছেন তাতে বাহবা পেতেই পারেন। মু্স্তাফিজ ও মিরাজ পুরো আসরে ছিলেন দুর্দান্ত। লিটন টপ ফর্মে না থাকলেও কি করতে পারেন, তা ক্রিকেট বিশ্বকে দেখিয়েছেন। ভারতের দুর্দান্ত বোলিংয়ের বিপক্ষে ১২১ রান করা তো মামুলি বিষয় না।
দুই দলের ব্যাট-বলের যে লড়াই হয়েছে তাতে জিতেছে ক্রিকেট। ভারত জিতেছে শিরোপা। আর বাংলাদেশ জিতেছে হৃদয়। সেজন্য অভিনন্দন তাদের প্রাপ্য।