
কল্যাণ বড়ুয়া মুক্তা, বাঁশখালী: বাঁশখালী উপকূলীয় এলাকায় পর্যাপ্ত ঘূর্ণিঝড় আশ্রয় কেন্দ্র নেই। এতে করে ঘূর্ণিঝড় ফণী নিয়ে আতংকিত উপকূলীয় এলাকার মানুষ।
সরকারি হিসাব মতে, বাঁশখালীর ৬ লক্ষাধিক মানুষের জন্য ১১৭টি আশ্রয় কেন্দ্র আছে। এর মধ্যে ১৫টি আশ্রয় কেন্দ্র ব্যবহার অনুপযোগী। ১০২টি স্কুল কাম সাইক্লোন শেল্টার হিসাবে নামে থাকলেও স্কুলসহ অন্যান্য কার্যক্রম পরিচালনা হওয়ায় বাস্তবে তার রয়েছে ভিন্ন চিত্র। সরকারি হিসাবে, ১০২টি আশ্রয় কেন্দ্রে প্রায় অর্ধ লক্ষাধিক লোক কোনো রকমে আশ্রয় নিতে পারবে। কিন্তু বাকি লোকগুলোর আশ্রয় নেওয়ার মতো পর্যাপ্ত ভবন নেই। তবে বর্তমানে বেশ কিছু পাকা বাড়ি থাকায় সেগুলোকে দুর্যোগকালীন আশ্রয় নেওয়ার মতো পরিবেশ তৈরি করার জন্য স্থানীয়ভাবে বলা হয়েছে।
দুর্যোগ প্রবণ এলাকা হিসাবে বাঁশখালী পৌরসভাসহ ১৪টি ইউনিয়নের মধ্যে ১০টি ইউনিয়নকে অধিক ঝুঁকিপূর্ণ হিসাবে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচির (সিপিপি) আওতায় স্বেচ্ছাসেবক কার্যক্রম রয়েছে। বিশেষ করে খানখানাবাদ, বাহারছড়া, পুকুরিয়া, কাথরিয়া, সরল, গন্ডামারা, শীলকূপ, ছনুয়া, শেখেরখীল, পুইছড়ি এলাকায় সিপিপির ১০৬৫ জন স্বেচ্ছাসেবক রয়েছেন। তারা এ দুর্যোগে প্রচার-প্রচারণায় অংশ নিচ্ছেন বলে জানান সিপিপির উপজেলা টিম লিডার মোহাম্মদ ছগীর।
এদিকে, ঘূর্ণিঝড় ফণীর কারণে সতর্কতা হিসাবে প্রশাসনের পক্ষ নানা ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। দুর্যোগে আশ্রয় কেন্দ্রের ব্যাপারে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আবুল কালাম মিয়াজী বলেন, ১০২টি আশ্রয় কেন্দ্র খোলা রাখা হয়েছে। আরো প্রচুর আশ্রয় কেন্দ্র স্থাপন প্রয়োজন। তবে বর্তমানে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ের আওতায় সরল, খানখানাবাদ ও শেখেরখীলে ৩টি বহুমুখী ঘূর্ণিঝড় কাম আশ্রয় কেন্দ্র নির্মাণ করা হচ্ছে। এর প্রতিটির ব্যয় ২ কোটি ১৯ লক্ষ ৬০ হাজার টাকা করে।
ঘূর্ণিঝড় মোকাবেলার প্রস্তুতি নিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোমেনা আক্তার বলেন, প্রশাসনের পক্ষ থেকে সার্বক্ষণিক মনিটরিং থেকে শুরু করে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটি প্রতিনিয়ত মিটিংয়ের মাধ্যমে খবরাখবর রাখছে। আশ্রয় কেন্দ্রের ব্যাপারে তিনি বলেন, এখানে আরো আশ্রয় কেন্দ্র নির্মাণ প্রয়োজন। প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে তা অবহিত করা হয়েছে। এদিকে, বাঁশখালীর উপকূলীয় এলাকায় স্থায়ী বেড়িবাঁধ নির্মাণ কার্যক্রম শুরু হয়েছে ৩ বছর পেরিয়ে গেছে। কাজ শেষ না হওয়ায় সাগরের পানি প্রবেশ করার হুমকিতে রয়েছে উপকূলীয় এলাকা। বেশ কিছু এলাকা এখনো বেড়িবাঁধ নির্মাণের আওতায় না আসায় সেখানে জনগণ শঙ্কার মাঝে দিনযাপন করছে। ছনুয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এম হারুনুর রশিদ বলেন, আমার এলাকায় অধিকাংশ বেড়িবাঁধ এখনো অরক্ষিত। দুর্যোগ এলে জনগণের সামগ্রিক ক্ষতির পাশাপাশি জানমালের ক্ষতি হতে পারে। উপকূলীয় এলাকায় বেড়িবাঁধ নির্মাণ কাজ দ্রুত শেষ করতে সংসদ সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরীর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন তিনি।